ঢাকা, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ঢাকায় নবনিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধান মাইকেল মিলারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবি পার্টির শীর্ষ নেতারা। বুধবার সকালে ঢাকাস্থ ইইউ মিশনে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় অন্তর্বর্তী সরকার, নির্বাচন, সংস্কার কমিশন, ট্রুথ ও রিকনসিলিয়েশন প্রসেসসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স ইনচার্জ ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানি আবদুল হক এবং ইন্টারন্যাশনাল টিমের অন্যতম সদস্য হাজরা মেহজাবিন। অন্যদিকে, ইইউ প্রতিনিধি দলের ডেপুটি হেড ড. বার্ণড স্প্যানিয়ারও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
গণতন্ত্রের পথে অন্তর্বর্তী সরকারের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
এবি পার্টির নেতারা রাষ্ট্রদূত মিলারকে দলটির আত্মপ্রকাশ, সাংগঠনিক কাঠামো এবং তরুণদের মধ্যে তাদের রাজনীতির জনপ্রিয়তা সম্পর্কে অবহিত করেন। বিশেষ করে, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন এবং সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানে দলের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এবি পার্টি মনে করে, ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী শাসকের দিল্লিতে পলায়নের পর অন্তর্বর্তী সরকার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। তবে জনগণের মধ্যে এখনও তাদের প্রতি আস্থা রয়েছে। যদিও সরকার ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছে, তবে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আরও আন্তরিক প্রচেষ্টা চালানো জরুরি বলে মত দেন তারা।
বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ক: অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও সহযোগিতা
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইইউর বিনিয়োগ এবং অবদানকে স্বীকৃতি জানিয়ে এবি পার্টির নেতারা বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইইউর আরও সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে। ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের সম্ভাবনা বাস্তবসম্মত নয় উল্লেখ করে, এই বিষয়ে পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তারা। এ ছাড়া, বাংলাদেশের জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধা নিশ্চিত করতে ইইউর সহায়তা চাওয়া হয়।
এবি পার্টির মতে, দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনে দুর্বল হয়ে পড়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে ইইউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রযুক্তি স্থানান্তর, এফডিআই বৃদ্ধি এবং তথ্যপ্রযুক্তি ও পর্যটন খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে কোটি কোটি বেকারের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে ইইউর অবদান প্রত্যাশা করে দলটি।
রাষ্ট্রদূত মিলার গণতন্ত্রে উত্তরণের বিষয়ে আরও জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং আশ্বস্ত করেন যে ইইউ বাংলাদেশের পাশে থাকবে এবং সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।