রাজু আহমেদ: প্রকাশিত ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
ঢাকা: কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ৩০ হাজারের বেশি গ্রাহকের ১০০ কোটি টাকারও বেশি আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার, মিরপুর ১১-এর কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস অফিস ও পল্লবী থানার সামনে শত শত ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা মানববন্ধন করেন।
গ্রাহকদের অভিযোগ
ভুক্তভোগীরা জানান, জসিম উদ্দিন সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত টাকা আত্মসাৎ করে গা-ঢাকা দিয়েছেন। প্রতিদিন অসংখ্য গ্রাহক নান্নু সুপার মার্কেটের সামনে কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন টাকা ফেরত পাওয়ার আশায়, কিন্তু প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা অনুপস্থিত।
প্রতারক জসিম উদ্দিন এই টাকার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন, যার মধ্যে রয়েছে—
জসিম গ্রুপ অফ কোম্পানিজ লিমিটেড
জসিম কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস
জসিম মেডিকেল ও ডায়াগনস্টিক
নিট কম্পোজিট, রিক্রুটিং এজেন্সি, ট্রাভেল এজেন্সি, রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ইত্যাদি
গ্রাহকরা আরও জানান, রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে ও সন্ত্রাসী বাহিনীর সহায়তায় জসিম উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে তার প্রতারণার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। একসময় আওয়ামী লীগপন্থী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় থাকলেও, বর্তমানে বিএনপির কিছু নেতার সহায়তায় তার প্রতারক চক্র সক্রিয় রয়েছে।
গ্রেপ্তার ও সম্পদ বাজেয়াপ্তের দাবি
ভুক্তভোগীরা জসিম উদ্দিন, তার স্ত্রী ও সহযোগী শাকিলসহ সংশ্লিষ্ট প্রতারকদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে তাদের সমস্ত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানিয়েছেন। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন আত্মসাৎকৃত টাকা উদ্ধার করে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ফেরত দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও প্রশাসনের ভূমিকা
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রউফ নান্নু ও তার ভাই, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান কচির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় জসিম সহজেই প্রতারণা চালিয়ে যান। বর্তমানে বিএনপির কিছু নেতা কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস ও জসিম মেডিকেলের দায়িত্ব নিয়ে নিজেদের মালিক দাবি করছেন। এতে গ্রাহকদের টাকা ফেরতের বিষয়টি আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আগে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের দাবিয়ে রাখত, এখন বিএনপির লোকজন মালিকানা দাবি করছে। তাহলে আমাদের টাকা ফেরত দেবে কে?”
দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান
ভুক্তভোগীরা সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, প্রশাসন যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে তারা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।