নিজস্ব প্রতিবেদক: রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ইং
ঢাকা: একসময় মিরপুর পল্লবী ও রূপনগরে ভাড়া থাকা সাধারণ এক ব্যক্তি, আজ কয়েকশ কোটি টাকার মালিক। রাজনীতির আড়ালে গড়ে ওঠা এই অর্থ সাম্রাজ্যের পেছনে রয়েছে প্রভাবশালী মহলের ছায়া। আলোচিত এই ব্যক্তির নাম মালেক, যিনি স্থানীয়ভাবে ‘মিষ্টি মালেক’ নামে পরিচিত।
অল্প সময়ে সম্পদের পাহাড়
অল্প কয়েক বছরে মালেকের সম্পদের পরিমাণ আশ্চর্যজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে নানা গুঞ্জন চলছে। কেউ বলেন, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ‘মিষ্টির প্যাকেটে’ করে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন বলেই এত অল্প সময়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। আবার কেউ কেউ দাবি করেন, মিষ্টির ব্যবসার আড়ালে মাদক ও অবৈধ অস্ত্রের বাণিজ্য চলত। যদিও এ ব্যাপারে এখনো কোনো শক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
রাজনীতির সাথে সম্পর্ক
স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের আমলে এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন মালেক। দলীয় প্রোগ্রামগুলোতে তিনি প্রচুর অর্থ ব্যয় করতেন, এমনকি এমপির পারিবারিক অনুষ্ঠানেও মিষ্টির প্যাকেটের ছড়াছড়ি থাকত। এই সম্পর্কের কারণেই তিনি এলাকায় বহুতল ভবনসহ বিপুল সম্পদের মালিক হতে পেরেছেন বলে অনেকের ধারণা।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময়ও মালেক বিপুল অর্থ ব্যয় করেছিলেন, যা আন্দোলন দমনে ভূমিকা রেখেছিল। পরবর্তীতে ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে তার রাজনৈতিক অবস্থানও বদলে যায়। বর্তমানে তার পরিবারের সদস্যরা বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত বলে জানা গেছে। গণঅভ্যুত্থানে ইলিয়াস মোল্লা সম্পদ ফেলে পালিয়ে গেলেও মিষ্টি মালেক বনলতার প্যাকেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের দুয়ারে ধর্না দিচ্ছে।”
অবৈধ সম্পদের উৎস কী?
মিষ্টি বিক্রি করে শত শত কোটি টাকা অর্জন সম্ভব নয় বলে মত দিয়েছেন স্থানীয় মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, মালেকের আয়ের উৎস অন্য কিছু। তবে কী সেই উৎস, তা কেউ নিশ্চিতভাবে জানে না।
স্থানীয়রা জানান, মিরপুরে তার একাধিক বাড়ি রয়েছে এবং তিনি একাধিক বিবাহও করেছেন। তবে তার এই বিপুল সম্পদের পেছনে রাজনৈতিক প্রভাবের ভূমিকা রয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন।
প্রশাসনের নিরবতা
মালেকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রশাসনও বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, মালেকের সম্পদের বৈধতা নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার। তিনি কীভাবে রাতারাতি প্রভাবশালী হয়ে উঠলেন, সেটি খতিয়ে দেখা জরুরি। তবে এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মালেকের প্রতিক্রিয়া
এ বিষয়ে জানতে মালেকের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর দেননি।