বাংলাদেশে একাত্তর.কম– আল্লাহ মেঘ দে পানি দে ছায়াদেইরে তুই, আল্লাহ মেঘ দে – কিংবদন্তি সেই গানটি যেন গত ৯ দিন ধরে দেশের সবার মনে মনে বাজছিল। প্রার্থনা শেষে মোনাজাতেও আকুল আকুতি ছিল নগরবাসীর মনে।
প্রায় প্রতি দিনই আকাশের মন ভারী হতো তবু কাঁদত না সে দিত না ছায়া। কোথায় যেন হারিয়ে যেত সাদা মেঘের ভেলা। তপ্ত রোদের ক্ষোভে নাকাল জনজীবন। আকাশে না উড়ে গাছের ছায়াতলে সারাদিনই বসে ঝিমাত পাখিরা। গরমে ঘর থেকেও কেউ বের হতেও চাইতো না।
অবশেষে বিধাতার রহমতে সিক্ত হলো ধরিত্রি। রাত ১0টায় নামল সেই বহুকাঙ্খিত আকাশ ভিজে বৃষ্টি। যে বৃষ্টির আশায় চাতক পাখির মতো রাজধানীবাসী আকাশপানে চেয়েছিলেন সেই বৃষ্টি বজ্রপাতসহ হাকডাক দিয়ে বেশজোরেই নামল।
এ যেন লিখে রাখার মতো মাহেন্দ্রক্ষণ। রাত ১০টার পর শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া হালকা শীতল বাতাস, তারপর নামে ঝুম বৃষ্টি। রাত পনে ১১টায় মিরপুর, পল্লবী, টেকের বাড়ী,মুসলিম বাজার,মিরপুর-১ শাহ আলী মাজার এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে ।
অবশ্য আজ শেষ বিকালে সূর্যের তেজকে কমিয়ে দিয়েছিল মৃদুমন্দ বাতাস। সে সময় ইশান কোণে মেঘ জমতেও দেখা গিয়েছিল।
এর আগে আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস ছিল, হয়তো ইফতারের আগেই বুঝি নামবে বহুল প্রতীক্ষিত বৃষ্টি। কিন্তু তখনও সেই একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি। বৃষ্টি নামার নাম নেই প্রকৃতির মুখে।
ঘূর্ণিঝড় ফনির প্রভাবে সারা দেশে বৃষ্টি হয়েছিল। এর পর শুরু হয় প্রচণ্ড তাপদাহ। রমজান মাসেও বৃষ্টির দেখা না মিলায় চরম ভুগান্তি ও অস্বস্তিতে পড়ে রোজাদার ব্যক্তিরা। সর্বশেষ ঢাকা বৃষ্টি হয়েছিল গত ৪ই মে।
এরপর সারা দেশ তাপদাহে পুড়ে ছাড়খার। রাজশাহীতে সবোর্চ্চ তাপমাত্রা হয় ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বৃষ্টির জন্য অপেক্ষায় চাতক পাখির ন্যায় আকাশে চেয়েছিল সবাই। চলছিল আলোচনা।কখন হবে একটু বৃষ্টি।
অবশেষে সোমবার রাতে নয় দিন পর সেই অপেক্ষার অবসান হলো। রাজধানীর বুকে নামে স্বস্তির বৃষ্টি ও ঠান্ডা শীতল বাতাস। সেই বৃষ্টিতে প্রশান্তি আসে গরমে হাঁপিয়ে ওঠা নাগরবাসী ও রোজাদারদের মধ্যে।
সোমবার বিকালে বৃষ্টি হওয়ার খবর এসেছে দেশের দক্ষিনাঞ্চল গোপালগঞ্জ ও উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়, রংপুর, মধ্যাঞ্চলের ময়মনসিংহ, উত্তর পূর্বাঞ্চলে সিলেট থেকেও। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। সেখানে ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়ার অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই বৃষ্টি আরও কয়েক দিন থাকতে পারে।