রূপনগর ক্লাবের জুয়া খেলা অবস্থায় ৪৪ জন র্যাবের হাতে আটক/ পালাতে গিয়ে ময়লা পানির ডোবায় প্রেসিডেন্ট ইমন/ বিস্তারিত
বিশেষ প্রতিনিধি:
ঢাকার মিরপুর রূপনগরে বহুদিন ধরেই চলছে লাখ লাখ টাকার ক্যাসিনো জুয়া খেলা, রূপনগর ক্লাব লিমিটেড নামের আড়ালে রাতদিন চলে আসছিলো এই জুয়া বানিজ্য। এ ক্লাবের স্থানীয় ভাবে নাম করণ করা হয়েছে ‘মিনি ক্যাসিনো। রূপনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বদলি হওয়ার পরই জুয়ার আসরে র্যাব-৪ অভিযান করে ৪৪ জন জুয়ারীকে আটক করে।অভিযানের নেতৃত্বদেন মেজর কামরুল ইসলাম।
র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়েই রূপনগর ক্লাব লিমিটেড এর মালিক (প্রেসিডেন্ট) কথিত সাংবাদিক এসএম ইমন জুয়ার স্পটের পিছন দিয়ে দৌড়ে পালানোর সময় অসাবধানতায় ড্রেনের ময়লা পানি ও ডোবা নালার ভিতরে পড়ে যান তিনি। ওই ড্রেন দিয়েই এলাকার সব মল-মুত্র বের হয়।
গত বৃহস্পতিবার (২৭-মে ২০২১) বিকালে রাজধানীর রূপনগর আবাসিক মোড়ে, রূপনগর জুয়াক্লাবে অভিযান পরিচালনা করেন র্যাব-৪। নগদ’৭২ হাজার ২শ ৩৫ টাকা, বিভিন্ন নামি-দামি ব্যান্ডের ৪৭ টা মোবাইল ফোন,১৮টা মানিব্যাগ ও ৮ সেট তাস উদ্ধার করেন।
মহামারী করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যেখানে সারা পৃথিবীর মানুষ আতংক রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ রয়েছে। সেখানে তারা জড়ো হয়ে জুয়া খেলা নিয়ে ব্যস্ত। সরকারের পক্ষ থেকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলাচলের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেনা এ জুয়ারীরা।
জানা গেছে, রূপনগর ক্লাবের মালিক মুল হোতা কথিত সাংবাদিক এস এম ইমনের গ্রামের বাড়ী চাঁদাপুর মতলব এলাকায়, বর্তমানে রূপনগর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় বসবাস করে। আটককৃত জুয়ারিদের বিরুদ্ধে মামলা চলমান।
(www.rupnagarclubltd.com) রূপনগর ক্লাবের এই ওয়েবসাইটে থানার ওসিসহ বিভিন্ন আওয়ামিলীগের নেতা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে স্থায়ী মেম্বার ও পদবি করে তালিকা রয়েছে।
ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে যাদের দেখা গেলো: তারা হলেন-১) কথিত সাংবাদিক এসএম ইমন (প্রেসিডেন্ট)। ২, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোফাজ্জল হোসেন টেনু (ভাইস প্রেসিডেন্ট)। ৩ রূপনগর থানার সাবেক ওসি আবুল কালাম আজাদ বর্তমানে বাড্ডা থানায় কর্মরত (জেনারেল সেক্রেটারি ও স্থায়ী সদস্য) ,৪ মোঃ নুরে আলম খোকন (জয়েন্ট সেক্রেটারি), ৫) ঝিলপাড় বস্তির নিয়ন্ত্রণকারী আব্দুস সাত্তার (সদস্য), ৬) মোঃ মোবাশ্বের আলী (সদস্য),৭) ফারুক (সদস্য), ৮) রূপনগর থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফ মোল্লা (অস্থায়ী সদস্য), ৯) মোঃ আওলাদ হোসাইন (জেনারেল সদস্য), ১০) রেজাউল ইসলাম খান (সদস্য),১১) মোঃ শামসুজ্জামান (সদস্য), ১২) নিপা আক্তার (আজীবন সদস্য)।
স্থানীয়রা এ প্রতিবেদকের কাছে বলেন, প্রেসিডেন্ট ইমন আগে “গ্যাস চুলার মিস্ত্রি ছিলেন। পরে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দির্ঘদিন ধরে রুপনগর থানা প্রশাসনের সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রশাসনের নাকের ডাগায় বসেই এলাকায় জুয়া চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড করে আসছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাহাতাব উদ্দিন বলেন, ক্লাবের সেক্রেটারি ওসি হলে দোষ কি? তিনি তো জুয়া খেলেনি। তিনি আরো বলেন, ঢাকা বোর্ড ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আমাদের আইজিপি স্যার, সে কিভাবে হলো? ওসি হলে দোষের কি? ক্লাবের অন্যন্য মেম্বার যদি জুয়া খেলে তার দায়ভার তো সে নিবে কেন? ওসি তো আর জুয়া খেলেনি, তাকে র্যাবও ধরেনি।
এ বিষয়ে র্যাবের মেজর কামরুল ইসলাম বলেন, মুল হোতা ইমন ‘গা’ ঢাকা দিয়েছে, স্পট থেকে ৪৪ জন কে আটক করা হয়েছে। ইমনের বিরুদ্ধে বহু-অভিযোগ রয়েছে।