রূপনগরে জমি দখলে মোস্তাকের নতুন প্রতারণা
ভুক্তভোগীদের দমনে রাখতে বিভিন্ন সময় সরকারি কর্মকর্তার পরিচয়ে দিয়ে (সাদা পোষাক ধারী) লোকজন ভাড়া করে এনে সার্ভেয়ার করান গ্যারেজের জমি:
মীর আলাউদ্দিন:
ঢাকা; রাজধানী মিরপুর রূপনগর এলাকায় জমি দখলের জন্য নতুন প্রতারণায় নেমেছে মোস্তাক আহমেদ নামের এক ব্যক্তি। এর আগে তিনি একই নামে একাধিক ভোটার আইডি কার্ড, প্রতারক ও মামলাবাজ হিসেবে রূপনগর এলাকায় পরিচিত লাভ করেন। বিগত কিছু দিন যাবৎ তিনি রূপনগর এলাকার একটি রিক্সা গ্যারেজ দখলের চেষ্টা করে। না পেরে সুইটি নামের এক মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রিকে বিভিন্নভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে চলছে প্রতারক মোস্তাক। কখনো কখনো ভুয়া শ্রমিকলীগ নেতা, র্যাব কর্মকর্তা ও পুলিশ সাজিয়ে লোক পাঠায় সুইটির গ্যারেজে।
সর্বশেষ কোন কিছুতেই সুবিধা করতে না পেরে সুইটি নামের ওই নেত্রির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে তাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালায়। তাতেও জমিটি দখল নিতে না পেরে এখন ওই নেত্রীর কাছে বিভিন্ন ভাবে চাঁদা দাবি করছে।
মোস্তাকের অত্যাচার সইতে না পেরে সর্বশেষ আওয়ামিলীগ নেত্রী সুইটি আক্তার শানু গত ৩০ সেপ্টেম্বর রূপনগর থানায় মোস্তাকের বিভিন্ন অপর্কমের বিষয় নিয়ে সাধারণ ডাইরী (জিডি )করে।
এলাকাবাসী জানান, মোস্তাকের নিজের নাম ও বাবার নাম বদলে প্রায় ১০টিরও বেশি ভোটার আইডি কার্ড বানিয়েছেন। আরেকটি কাগজে মোস্তাক তার বাবার নাম পাল্টে দিছে। এমন একাধিক তথ্য এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এবিষয়ে মোস্তাক বলেন, দরকার হয়েছিল তাই বাবার নাম পরিবর্তন করতে হয়েছিলো। এছাড়া মোস্তাক বিভিন্ন অসহায় মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। মিথ্যা পরিচয় দেয়। এছাড়াও তার গ্রামে সে গরু চোর হিসেবে পরিচিত বলেও সুত্র বলছে।
স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, রূপনগর মোস্তাক বাহিনীর মুলহোতা মোস্তাক তার সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য রূপনগর আবাসিক এলাকার রানা চৌধুরী। তার নামেও জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। রানার মেয়ের জামাই কাইল্লা নয়নও মোস্তাক বাহিনীর হয়ে কাজ করে।
জমির বর্তমান মালিক সুইটির এই জমিতে মোস্তাকের হয়ে সিকিউরিটি গার্ড রাখার জোরপূর্বক পায়তারা করে নয়ন। গোপালগঞ্জ মোস্তাক ও নয়নের বাড়ী হওয়ায় সুবাদে “কথায় কথায় বলে” দেশের বড় বড় আওয়ামী নেতা ও প্রশাসনের কর্মকর্তা সব তাদের পকেটে।
হঠাৎ একদল সাদা পোষাকধারী লোক প্রবেশ করে রূপনগরে সুইটির গ্যারেজে। বিভিন্ন কথার ফাঁকে ফাঁকে ছবি তুলতে শুরু করে তারা। গ্যারেজে থাকা কর্মচারীরা তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা প্রশাসনের লোক বলে জানান। তাদের আচার-আচরণ দেখে সন্দেহ হলে পরে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে সাদপোষাকাধারী সরকারি কোনো প্রশাসনের লোকজন না, তারা একটি সিকিউরিটি গার্ড কোম্পানির লোক।
এবিষয়ে, ফ্যালকন সিকিউরিটি লিমিটেড কোম্পানির আনোয়ার হোসেন বলেন, নয়ন নামের এক লোক আমাদের নিয়ে গেছে। তিনি বলেছেন তার সম্পত্তি আছে, সেখানে সিকিউরিটি গার্ড লাগবে আমরা সেই সুবাদে জায়গাটি পরিদর্শনে গিয়ে ছিলাম। ডিজিএফআইয়ের লোক পরিচয় দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমরা কোনো পরিচয় দেয়নি কে দিছে সেটা আমি বলতে পারবোনা।
ভুক্তভোগী আওয়ামীলীগ নেত্রী সুইটি বলেন, আমি বিভিন্ন ভাবে মোস্তাক দ্বারা হয়রানির শিকার হচ্ছি, সে বিভিন্ন প্রশাসনের লোকজনের ভয় দেখায়। তার অত্যারে রুপনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।
এ বিষয়ে মোস্তাকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি “মুঠোফোনে”বলেন, আমি এনএসআইয়ের কাছে আমার জমির কাগজপত্র দিয়েছি তারা এটার বিষয়ে রিপোর্ট করে ব্যবস্থা নিবে।
প্রতিবেদক এনএসআইয়ের এক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানতে পারে এনএসআই জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করেনা। এনএসআই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, কাউন্টার-ইন্টেলিজেন্স ও বৈদেশিক গোয়েন্দা সম্পর্কিত ক্ষেত্রগুলোতে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করে। সংস্থাটি সরাসরি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।