সোমবার , ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আওয়ামীলীগ
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বি এন পি
  10. বিনোদন
  11. বিশেষ সংবাদ
  12. রাজধানী
  13. রাজনীতি
  14. লাইফস্টাইল
  15. শিক্ষা

মিরপুরে হত্যা মামলার পলাতক আসামী ১২ বছর পর গ্রেফতার

প্রতিবেদক
বাংলাদেশ একাত্তর
সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২ ৭:০৩ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ একাত্তর.কম/নিজেস্ব প্রতিবেদক; প্রকাশিত/ সোমবার/২৬/০৯/২০২২ইং

রাজধানীর মিরপুর শাহ আলী এলাকার চাঞ্চল্যকর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে বাসু মিয়াকে হত্যা করে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ রাতে বরিশাল মহানগরী এলাকা হতে চাঞ্চল্যকর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে বাসু হত্যা মামলার প্রধান আসামী দীর্ঘ ১২ বছরের পলাতক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মোঃ আলকেস (৫২)’কে গ্রেফতার করতে

সক্ষম হয়।

ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ আলকেস, মামলার বাদী চিনু মিয়া ও  বাসু মিয়া (৪৮) একই এলাকার বাসিন্দা।

মামলার বাদী চিনু মিয়া নিহত বাসু মিয়ার আপন ছোট ভাই। গ্রেফতারকৃত আসামী  শাহ আলী থানাধীন চটবাড়ী নবাবেরবাগ এলাকার ২০০ সদস্য বিশিষ্ট একটি মৎস্যজীবী সমিতির সদস্য। নিহত বাসু মিয়া ও বাদী চিনু মিয়ার চটবাড়ী এলাকায় ১০ শতাংশের একটি পৈত্রিক দখলীয় সম্পত্তি ছিল। জমিটি আজগর আলীর কাছে বাৎসরিক ভিত্তিতে লীজ দেওয়া ছিল। কিন্তু একসময় আসামী আজগর আলী প্রতারণার মাধ্যমে জাল দলিল করে নিজের নামে জমি নিয়ে নেয় এবং পরবর্তীতে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ২০১০ সালে সমিতির নামে জমি হস্তান্তর করে। এতে করে উক্ত জমি মালিকানা নিয়ে মামলার বাদী চিনু মিয়া এবং নিহত বাসু মিয়ার সাথে মৎসজীবি সমিতির বিরোধ সৃষ্টি হয়। জমির মূল মালিক চিনু মিয়া ও বাসু মিয়া। সমিতির লোকজনের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এই মামলার আসামী আলকেসসহ অন্যান্য আসামী আজগর, গিয়াস উদ্দিন, সানু মিয়া, জিন্নাত, রুমা, কদর আলীদের নেতৃত্বে উক্ত সমিতির নামে জমিটি জোরপূর্বক দখল করে জায়গাটিতে সীমানা প্রাচীর করে ফেলে।

তখন এই মামলার বাদী চিনু মিয়া ও নিহত বাসু মিয়া আসামীদের সাথে বিরোধে না জড়িয়ে বিজ্ঞ সিভিল আদালতে মামলা দায়ের করার পর প্রায় দুই বছর পর বিজ্ঞ আদালত বাদী চিনু মিয়া ও বাসু মিয়ার পক্ষে রায় প্রদান করে। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতের রায় পেয়ে উক্ত জমিতে ২০১২ সালের শুরুতে বিল্ডিং নির্মাণ করা শুরু করে ১ম তলার ছাদ পর্যন্ত নির্মাণ কাজ সম্পূর্ন হয়।

ঘটনার দিন ১৪ মে ২০১২ তারিখ বিকেল ৫টার সময় বাদী চিনু মিয়ার ভাই ভিকটিম বাসু নবনির্মিত বিল্ডিংয়ের ছাদে পানি দেয়ার জন্য একজন কর্মচারী নিয়ে যায়। তখন উক্ত সমিতির সদস্যরা অর্থাৎ এই মামলার এজাহারনামীয় আসামী আলকেস, আজগর, রাজু, খলিল, সেলিম, কদর আলী, লেদুসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৬/৭ জন আসামী আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড নিয়ে আক্রমণ করে। আক্রমনের এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত আসামী আলকেস তার কাছে থাকা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা কয়েক রাউন্ড গুলি করলে বাসু মিয়ার মাথার বাম পাশে লেগে ডান পাশ দিয়ে বের হয়ে গেলে বাসু ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে।

এই ঘটনায় ভিকটিমের ভাই চিনু মিয়া গ্রেফতারকৃত আসামী আলকেসসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৬/৭ জন আসামীর বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগরীর শাহ আলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-২৪, তাং- ১৪/০৫/২০১২, ধারা- ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩০২/৩৪ দন্ডবিধি।

ঘটনার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে আলকেসসহ অধিকাংশ আসামিদের পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করে। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে আসামী আলকেস নিজেকে সম্পৃক্ত করে অন্যান্য আসামীর নাম উল্লেখপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। কিন্তু আসামীরা চার মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেলে অন্যান্য আসামিরা আদালতে হাজিরা দিলেও আসামী আলকেস জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায় এবং এই মামলায় আর কখনো হাজিরা দেয়নি।

উক্ত মামলাটি তদন্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা বিজ্ঞ আদালতে এজাহারনামীয় ১৩ জন এবং তদন্তে প্রাপ্ত ১ জনসহ মোট ১৪ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত পর্যাপ্ত স্বাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে বিচারকার্য পরিচালনা করে।

১৫ নভেম্বর ২০২১ তারিখ আসামী মোঃ আলকেস, আজগর আলী, খলিল, সেলিম ও রাজুসহ মোট ০৫ জন আসামীকে মৃত্যুদন্ড, আসামী কদর আলী ও লেদু’কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। জামিনে থাকা অবস্থায় গ্রেফতারকৃত আসামী আলকেস গং এর সাথে আসামী আজাহার ও সানুর মতবিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় আলকেস গং কর্তৃক আজাহার ও সানু নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হয়। এই ডবল মার্ডারের মূল আসামী মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত গ্রেফতারকৃত আসামী আলকেস। উক্ত ঘটনায আসামী মোঃ আলকেস এর বিরুদ্ধে আরো একটি হত্যা মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন এবং তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট পেন্ডিং আছে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী কদর আলী হাজতে থাকা অবস্থায় স্টোক করে মারা যায় এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত আসামী নসু, জিন্নাত, গিয়াস, সালেম উদ্দিন এবং রুমাসহ মোট ৫ জনকে খালাস প্রদান করে। 

গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।

সর্বশেষ - সর্বশেষ সংবাদ