প্রতিবেদক/পল্লব:
রাজধানীর মিরপুরে এক গৃহবধূকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে কথিত যুবলীগ নেতা মনোয়ার হোসেন দুলাল ওরপে কারেন্ট দুলালের বিরুদ্ধে।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রুপনগর থানাধীন ২৮ নম্বর রোডের ১০ নম্বর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই কথিত যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে শনিবার (১ আগস্ট) ধর্ষণ মামলা করেন ভিকটিমের স্বামী ইব্রাহীম হোসেন।
মামলা নং-১, সূত্রে জানা যায়, ভিকটিমের স্বামী পেশায় প্রাইভেটকার চালক। দুলাল ও তার গ্রামের বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় তার সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ সুবাদে দুলাল নিয়মিত তার বাসায় আসা-যাওয়া করতেন।
ঘটনার দিন রাত ৮টার দিকে ইব্রাহিম বাসায় এসে দেখতে পান তার স্ত্রী খালেদা আক্তার রোজিনা (২৫) ঘরে নেই। পরে বাসার আশপাশে খুঁজতে থাকেন। দীর্ঘ সময় পর রাত সাড়ে ১০টায় স্ত্রী বাসায় ফিরে এসে তাকে বিস্তারিত খুলে বলে।
মামলার এজাহার সুত্রে , ওই দিন রাতে বিভিন্ন প্রলোভন ও ফুসলিয়ে রূপনগর ২৮ নং রোডের ১০ নম্বর বাড়ীর ৫ম তলায় নিয়ে যান দুলাল। রুমের দরজা বন্ধ করে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ভাবে একাধিকবার ধর্ষণ করে। আজ মামলার ৬দিন অতিবাহিত হলেও ধর্ষণ মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী মনোয়ার হোসেন দুলালকে আটক করতে পারেনি রূপনগর থানা পুলিশ।
জানা গেছে আসামী দুলালের বাসা থানার মাত্র ১০ গজ দুরে। অন্যদিকে থানার মাত্র ১০০ গজ দুরে কারেন্ট দুলালের আস্তানা কাম যুবলীগ অফিস। থানার পাশে বাসা-অফিস থাকা সত্বেও পুলিশ কারেন্ট দুলালকে খুজে পাচ্ছেননা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণ মামলার আসামি মনোয়ার হোসেন দুলাল সে কারেন্ট দুলাল নামেই পরিচিত। যুবলীগের পরিচয়ে ঝিলপাড় বস্তি নিয়ন্ত্রণসহ বিদুৎতের অবৈধ সংযোগ দিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এই কারেন্ট দুলাল। এছাড়াও মাদকের সংশ্লিষ্টতা ও কিশোর গ্যাংয়ের দুটি বাহিনী নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ উঠে। মুলতো তাদের দিয়ে বস্তি নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড করায়।
যুবলীগের অবহেলিত নেতাকর্মীরা বলেন ২০০১ সালে যুবদলের সংগ্রামী নেতা হলেও বতর্মানে স্থানীয় কাউন্সিলরের হয়ে দুলাল কাজ করছে। রাজনৈতিক ৯২ নং ওয়ার্ড (সাংগঠনিক ইউনিট বর্তমানে ৬ নং ওয়ার্ড) যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে তাকে দেখা যায়। কোনো পদ পদবি না থাকলেও নিজেকে ওয়ার্ড যুবলীগের অন্যতম নেতা হিসেবে পরিচয় দেন। দীর্ঘদিন ধরে রূপনগর থানা সংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তিতে অবৈধভাবে দালান কোঠা তৈরি করে সেখানে যুবলীগের অফিস বানিয়ে বস্তি নিয়ন্ত্রণ মাদক বানিজ্য ডিস ব্যবসা সহ সকল অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতাদের সঙ্গে তার ছবি-সংবলিত বিভিন্ন পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার রুপনগর, আরামবাগ মিল্কভিটা মোড়, চলন্তিকা মোড় ও বস্তি এলাকা ছেয়ে গেছে। আসন্ন ওয়ার্ড কমিটিতে কারেন্ট দুলাল শীর্ষ পদ প্রত্যাশী বলে জানান স্থানীয় যুবলীগ নেতারা।
এবিষয়ে ৬নং ওয়ার্ড যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমিন বলেন যুবলীগে দুলাল বা কারেন্ট দুলাল নামে কাউকে চিনিনা। আমি পল্লবীর রাজনীতি করি যুবলীগের নাম বিক্রি করে কেউ যদি অপরাধ কর্মকান্ড করে তার দায়ভার দল নিবেনা। এক প্রশ্নে রুহুল আমিন বলেন ফেস্টুন ব্যানার অনেকেই করে এদের ভিতর সবাইকে তো আর চিনিনা। দুলাল কার সাথে রাজনীতি করে তাও জানিনা।
রুপনগর থানার ওসি আরিফুর রহমান সরদার বলেন, দুলালের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ মামলা হয়েছে গত ১ তারিখে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।