বাংলাদেশ একাত্তর.কম/নিজেস্ব প্রতিবেদক:
মহানগর আওয়ামিলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দারুসসালাম থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এবিএম মাজহার আনামকে নারী নির্যাতন মামলায় আটক করেছে ডিএমপির দারুসসালাম থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার ( ২৬ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম থানায় নারী নির্যাতন ও যৌতুক নিরোধ আইনে মাজহার আনাম সহ মোট ৭জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তার স্ত্রী ফিরোজা বেগম। এ মামলায় অন্য আসামীরা হলেন, কামরুল ইসলাম (৪৩)। মাকসুদ আনাম (৩৮)। মিলি (৪৮)। ফুয়াদ (২০)। সাগর সরকার (৪৫)। নাজমা আক্তার মুন্নী। তবে অন্তরঙ্গের ছবির মহিলার পরিচয় এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামী মাজহার বাদীর সাথে দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ ঘর সংসার করে আসছে তাদের ১১ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলে সন্তান রয়েছে। বিভিন্ন সময় আসামী মাজহার যৌতুকের জন্য বাদীর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত। বাদী দফায় দফায় বিশ লক্ষ টাকা এবং বিভিন্ন আসবাবপত্র ও নিত্যপণ্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী আসামী মাজহারকে প্রদান করেন। যেহেতু আসামী একজন লোভী লম্পট প্রকৃতির পরনারী আসক্ত ব্যাক্তি সেকারনে যৌতুক দেওয়ার পরেও তার লোভ দিন দিন বেড়েই চলেছে। একই সাথে একাধিক নারীর সাথে তার অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ছবি থাকার কারনে ধারনা করা যায় যৌতুকের টাকা ঐ সকল নারীর পিছনে ব্যায় করছে। আরও জানা যায়, গতবছর এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ বিকাল তিনটায় আসামী মাজহার অন্যান্য আসামীদের কুপ্রোরচনায় বাদীর পরিবারের নিকট হতে আরও দশলক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। যার ফলস্রুতিতে গতবছর ১২ ডিসেম্বর বিকেল তিনটায় আসামী মাজহার ও অন্যান্য আসামীরা পূর্বের দাবিকৃত দশলক্ষ টাকা চাইলে বাদী দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামীগণ তাকে শারীরিক নির্যাতন করে গুরতর আহত করে। পরে বাদীর আত্মীয় স্বজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হসপিটালে চিকিৎসা করায়। কিছুটা সুস্থ হয়ে বাদী একমাত্র শারীরিক এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপোষ মিমাংসার উদ্দেশ্যে সোমবার (২৫ জানুয়ারী ২০২১) সন্ধ্যা সাতটায় আসামী এবং বাদী যে ফ্লাটে বসবাস করত সেখানে গিয়ে দেখতে পায় বাদীর আলমারির তালা ভাঙ্গা এবং বাদীর বিয়ের সময় উপহার হিসেবে পাওয়া পনের ভরী স্বর্নালঙ্কার, গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র বিবাদীগণ সরিয়ে ফেলেছে। এ সময় মাজহার আনাম যৌতুকের দশলক্ষ টাকা ছাড়া বাদী কেন বাসায় ঢুকেছে এই বলে চুলের মুঠি ধরে কিল ঘুষি লাথি মারে এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে বাদী হাত দিয়ে ঠেকায়। মামলার অপর আসামী মিলি বাদীকে এলোপাথারি কিল ঘুষি লাথি মারে এবং বাদীর প্রতিবন্ধী সন্তানকে মারধর করে। তখন বাদীকে অন্যান্য আসামীরা মারধর করা অবস্থায় আসামী কামরুল ইসলাম বাদীর নাকে ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে। একপর্যায়ে আসামী মাজহার বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে অন্যান্য আসামীর সহযোগিতায় বালিশ চাপা দেয়। তখন বাদীর ডাক চিৎকারে আপোষ মীমাংসার জন্য পাশের রুমে অবস্থানরত বাদীর আত্মীয় স্বজন এগিয়ে এসে বাদীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করায়। এ বিষয়ে দারুসসালাম থানার এস আই (মামলার তদন্তকারী) মোফাজ্জল হোসেন বলেন, এজাহার ভুক্ত ১ নং আসামী মাজহার আনামকে আটক করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।
নারী আসক্তের বিষয়ে দারুসসালাম থানা ও শাহআলী থানা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, মাজহার আনামের বিরুদ্ধে নারীসহ বহুধরনের অনৈতিক কার্যকলাপের সাথে সে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্ত রয়েছে। আমরা তো আর তার বিচার করতে পারিনা। এটা মহানগরের নেতৃবৃন্দগন চাইলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারে।
জানাগেছে কিছুদিন আগে আসামী মাজহার আনাম অস্ত্রসহ বিমানবন্দর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেফতার হয়। এছাড়াও দারুসসালাম থানায় জমিদখলের অভিযোগে মামলা হয়েছিল।