নাফকো ডেভলপার কোম্পানি ও শেখ ফয়সাল হেলথ্ এক্সপ্রেস সার্ভিসের কর্নধার হতে সাবধান! ব্যবসার আড়ালে ভয়ংকর প্রতারক। ওরা অফিসে ডেকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা গহনা লুট করে ও ফাকা স্ট্যাম্প, ব্যাংকের চেক পাতায় সই রেখে ভিডিও ধারণ করে রাখে। এভাবে তারা তৈরি করেছে অর্ধবৃত্তের বিশাল সাম্রাজ্য।
বাংলাদেশ একাত্তর.কম: নিজস্ব প্রতিবেদক.
প্রথমে আপনাকে নানা ভাবে ব্যবসায়ী পার্টনার বানানোর আস্বাস দিবে অথবা অল্পদামে ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী করাবে। পরে কিছু টাকা বায়না লিগাল প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে নিবে। পরে কাগজে কলমে ব্যবসায়ীক পার্টনার অথবা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রাি করে দেওয়ার কথা বলে তার মিরপুর ৬ নম্বরে অফিস কাম বাসায় ডেকে নিবে এবং সাথে আনতে বলবে আগের অরিজিনাল ডিড ডকুমেন্টস ও বাকি টাকা। পরে তার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বেধে মারধর করে সব কেড়ে নিবে। ওরা বাপ-পুতে এমন ঘটনা বহুবার ঘটিয়েছে। তবে প্রতারক চক্রের মুল কারিগর শেখ হেদায়েত ও তার ছেলে শেখ ফয়সাল সব সময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেই যাচ্ছে।
জানাগেছে প্রতারকদের গ্রামের বাড়ী গোপালগঞ্জ তেলিগাতী। আওয়ামী সরকারের আমলে এভাবেই বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড ও ছিনতাইয়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ভয়ে কেউ ওই সময় মুখ না খুললেও হারিস ও ইমন নামের দুই ভুক্তভোগী গণমাধ্যম প্রতারক বাপ পুতের মুখোশ উন্মোচন করে। সুত্র বলছে গোপালগঞ্জ শহরে কালীবাড়ি মোড়ে ১০ তলা ভবন নির্মাণ করেছেন এই চক্র। দেশের বাইরেও সম্পদ রয়েছে।
এই প্রতারক চক্র বাপ-পুতের ৫০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। এদের দিয়ে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটায় প্রতিবন্ধী ফয়সাল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো প্রতারক বাপ-পুত্রকে পুলিশ কখনোই আটক করতে পারেনি! যতবার ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বাহিনীর সদস্যদের নামে মামলা হয়েছে কিন্তু বাহিনীর প্রধান শেখ হেদায়েত ও তার ছেলে শেখ ফয়সালকে পুলিশ কখনোই আটক করতে পারেনি।
জানাগেছে রাজধানীর মিরপুরে একই অভিনব কায়দায় চাদাঁবাজি ও প্রতারণা করে টাকা লুট করে পালিয়ে আসে পল্লবী থানা এলাকায়। খরব পেয়ে মিরপুর ১২ টেকেরবাড়ী থেকে ৬ জনকে গ্রেফতার করে পল্লবী থানা পুলিশ। পরে মিরপুর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের থেকে ৫৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকাসহ ১টি পিস্তল সদৃশ্য গ্যাস লাইট ও একটি লোহার সিন্দুক জব্দ করা হয়। এবং প্রতারক শেখ ফয়সালের মা দিলরুবা ও স্ত্রী সাদিয়া আক্তারকে জিজ্ঞাবাদ করে ছেড়ে দেয় মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো. মহসিন মুন্সি, মো. মাজাহারুল ইসলাম, মো. রেজাউল করিম, তৈয়ব, মো. হুমায়ুন কবির, ও নূর মোহাম্মদ ওরফে নতু।
জানাগেছে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসিন্দা মো. হারুনুর রশিদ ভূঞা (৬০) নাফকো ডেভেলপার কোম্পানি লিমিটেডের ধানমন্ডির রোড ৪/এ নির্মাণাধীন ১০ তলা বিশিষ্ট ভবনের ২য়, ৩য় ও ৮ম ফ্লোর ক্রয়ের জন্য তিন কোটি পচাঁত্তর লাখ টাকা মূল্যে; ত্রিশ লাখ টাকা বায়না নামা দলিল মূলে ক্রয়ের জন্য বায়না করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন তারিখে বিভিন্ন সময়ে এক কোটি তেইশ লাখ টাকা প্রদান করেন।
পরবর্তীতে নাফকো ডেভেলপার কোম্পানির ডিএমডি ও এমডি মোবাইল ফোনে ভিকটিমকে জানায় যে, গত ০৮ অক্টোবর সন্ধ্যার পরে মিরপুর মডেল থানার বাসা নং-৯/২, ব্লক-বি, সেকশন-০৬, রোড নং-০৫ এ তার অফিসে রেজিস্ট্রেশন করে দিবে এবং রেজিস্ট্রেশনের জন্য বকেয়া সমুদয় টাকা সঙ্গে করে আনতে। তখন বাদী ডিএমডি ফয়সাল শেখ কে বকেয়া টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যেমে দিতে চাইলে তিনি তাকে নগদ টাকা নিয়ে আসার জন্য জোর অনুরোধ করে।
এমডি ও ডিএমডির অনুরোধের প্রেক্ষিতে ০৮ অক্টোবর ২০২৪ আনুমানিক ৬টার দিকে ভুক্তভোগী, তার পরিবারের সদস্যসহ নগদ বাহাত্তর লাখ আশি হাজার টাকা দুইটি ব্যাগে করে নিয়ে নাফকো ডেভেলপার কোম্পানির অফিসে যান। এ সময় ভিকটিমের কাছে থাকা সাদা শপিং ব্যাগের ভিতরে বত্রিশ লাখ আশি হাজার টাকাসহ অজ্ঞাতনামা ০১ জন ব্যক্তি কার পার্কিং হতে ভিকটিমকে ৬ষ্ট তলার অফিস কক্ষে নিয়ে যায়। অবশিষ্ট চল্লিশ লাখ টাকা নিয়ে ভুক্তভোগীর স্ত্রী অফিসের নিচতলায় কার পার্কিংয়ে ব্যক্তিগত গাড়ির ভেতর অবস্থান করেন।
ভিকটিম, ডিএমডি ফয়সাল শেখ এর অফিসে বসে কথা বলার সময় হঠাৎ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জন ব্যক্তি মুখে মাস্ক পরা অবস্থায় পিস্তল সদৃশ্য বস্তু দিয়ে গুলি করার ভয় দেখিয়ে ভিকটিমকে মারধর করে বত্রিশ লাখ আশি হাজার টাকা কেড়ে নেয় ও তাদেরকে পাশের রুমে আটকে রাখে। পরবর্তীতে উক্ত অজ্ঞাত ব্যক্তিরা কার পার্কিংয়ে থাকা ভিকটিমের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও ড্রাইভারকে মারধর করে তাদের কাছে থাকা আরো চল্লিশ লাখ টাকা কেড়ে নেয়। তাছাড়া ভিকটিমের স্ত্রীর গলায় থাকা ০১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত ০৫ (পাঁচ)টি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। পরে ভিকটিমের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও ড্রাইভারকে ডিএমডি ফয়সাল শেখ এর অফিস কক্ষের পাশের রুমে সকলের সঙ্গে আটকে রেখে বাহির থেকে তালাবদ্ধ করে চলে যায়। সুত্র বলছে, শেখ ফয়সাল হেলথ্ এক্সপ্রেস সার্ভিস মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে ফ্রি চিকিৎসা সেবার নামে ফ্যামিলী কার্ড বিক্রি কেটি কোটি টাকা প্রতারণা করে হাতিয়েছে। তার বাবা শেখ হেদায়েত নাফকো ডেভলপার কোম্পানি খুলে বহু মানুষ কে ফ্ল্যাট বিক্রি নাম করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছে।
এই চক্রটি মিরপুর মডেল থানা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে এবং ছয়তলা একটি বাড়ীতে অফিস খুলে সকল অপরাধ কর্মকাণ্ড করে।
এ ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় ৯ অক্টোবর একটি মামলা রুজু হয়েছে বলে জানা গেছে।