শনিবার , ২৫ জুন ২০২২ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আওয়ামীলীগ
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বি এন পি
  10. বিনোদন
  11. বিশেষ সংবাদ
  12. রাজধানী
  13. রাজনীতি
  14. লাইফস্টাইল
  15. শিক্ষা

ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে চরিত্র হরণ-হত্যার হুমকি-চাঁদা দাবি; সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা

প্রতিবেদক
বাংলাদেশ একাত্তর
জুন ২৫, ২০২২ ৭:২৫ অপরাহ্ণ

প্রো. ডিজিটাল ভাস্ট ও স্পার্ক ভাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিইও) মোঃ তাফছির আহমদ খান ও স্ত্রী নারগিস সুলতানা ওরফে নওরিন আহমেদ দম্পতির বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা; থানায় রয়েছে আরো একাধিক অভিযোগ।

বাংলাদেশ একাত্তর.কম/ নিজেস্ব প্রতিবেদক ; 

ব্যবসার পরিচয় দিয়ে প্রথমে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন কাজ নেন। ওয়েবসাইট তৈরি, সোশাল মিডিয়া বিজ্ঞাপন তৈরি ইত্যাদি। কাজের স্বার্থে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্পোরেট ব্যাক্তিত্বদের সাথে ফেসবুক, ইমেইলে আদান প্রদানে সখ্যতা গড়ে তুলে।

পরবর্তীতে শুরু হয় তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করার আপ্রাণ চেষ্টা, কখনও হ্যাক করতে সফলও হয়, আবার কখনও হ্যাক করতে ব্যর্থও হয়, যখন হ্যাক করতে পারে না, ঠিক তখনই তার টার্গেট করা ব্যাক্তির নাম ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক আই ডি খুলে টার্গেট করা ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো শুরু করে এমনকি নারীদের নামে ফেক আইডি খুলে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দুরত্বের সৃষ্টি করে। যখন তার কার্যকলাপ টার্গেট করা ব্যাক্তির কাছে ধরা পরে যায়, তখন শুরু করে নতুন কাল্পনিক গল্প। টার্গেট করা ব্যাক্তিকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ ও হুমকি প্রদান করেন। আর পাশাপাশি ওই ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে আরও হেনস্তার সম্মুখে ফেলে তার কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার ফাঁদে ফেলে নিজেরাই বিভিন্ন ঘটনা সৃষ্টি করেন। ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে এমন অভিযোগ উঠেছে এক দম্পতির বিরুদ্ধে।

প্রো. ডিজিটাল ভাস্ট ও স্পার্ক ভাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিইও) মোঃ তাফছির আহমদ খানের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। মামলার বাদী এসএম আলী জাকের ওরফে সজীব বলেন, মামলাটি এখনো কোর্টের চলমান আছে। খুব শীঘ্রই মামলার শুনানি আছে। এছাড়া সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম ডিভিশনে। রমনা ও গুলশান থানায় রয়েছে আসামির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ।

অভিযুক্তরা হলেন: প্রো. ডিজিটাল ভাস্ট ও স্পার্ক ভাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিইও) মোঃ তাফছির আহমদ খান ও (তার স্ত্রী) নারগিস সুলতানা ওরফে নওরিন আহমেদ।

অভিযুক্ত দম্পতির বিরুদ্ধে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কাজ করে দেওয়ার কথা বলে এবং চুক্তি অনুযায়ী কাজ না করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সাইবার ট্রাইব্যুনালে প্রো. ডিজিটাল ভাস্ট ও স্পার্ক ভাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিইও) মোঃ তাফছির আহমদ খানের বিরুদ্ধে মামলা করেন এস এম আলী জাকের ওরফে সজিব।

মামলায় বলা হয়, (মামলা নম্বর: ২৯৬), আসামি তাফছির আহমদ খানের সাথে কর্পোরেট পেশা সূত্রে পরিচয় হয়। বনানীর ২০ নম্বর রোডের রেড ডট লিমিটেড নামের কোম্পানির কাছ থেকে ভুক্তভোগী সজীবের মাধ্যমে একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করে আসামি ওই কোম্পানির বকেয়া বিল পরিশোধ করেনা। ভুক্তভোগী আসামিকে ভৎসনা করেন। একটি পর্যায়ে আসামি ভুক্তভোগীকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।

আরো বলা হয়, আসামি তাফছির আহমদ ভুক্তভোগির ওপর প্রতিশোধ নিতে তার স্ত্রী, সন্তান ও ভিকটিম আলী জাকেরের পেশাগত সামাজিক সুনাম টার্গেট করে। আসামি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে Arpita Biswas (অর্পিতা বিশ্বাস) নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলেন। ভুয়া আইডি থেকে আসামি ২০ জুন ২০১৯ সালে বিকাল ৪ টার দিকে ভুক্তভোগির স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় মেসেজ পাঠায়। ভুয়া আইডি অর্পিতা বিশ্বাসের সাথে ভুক্তভোগির প্রেম আছে এবং অনেক মেয়ের সাথে ভুক্তভোগির অবৈধ সম্পর্ক আছে। ওই দিন দুপুরে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অকথ্য ভাষায় ভুক্তভোগির স্ত্রীর কাছে মেসেজ পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী এস এম আলী জাকের ওরফে সজীব বলেন, কর্পোরেট কাজের সুবাদে আসামি তাফসিরের সাথে পরিচয়। বেশ কিছুদিন একসাথে কাজ করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মেইল এড্রেস আসামির কাছে থাকায় এর অপব্যবহার করার চেষ্টা শুরু করে। ২০১৯ সালের ২০ জুন তারিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি ফেক আইডি থেকে আমার স্ত্রীকে আমার নামে নিয়ে মেয়ে ঘটিত যত ধরনের খারাপ কথা আছে সেসব মেসেজ দেয়। আমার প্রতি আমার স্ত্রীর বিশ্বাস থাকায় আমার সংসারে কোন সমস্যা হয়নি। বিষয়টি বুঝতে পেরে আমার স্ত্রী ২০১৯ সালের ২২ জুন তারিখে গুলশান থানায় অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে আমি আসামি তাফছির আহমদ খানকে চিহ্নিত করতে পেরে সাইবার ট্রাইব্যুনাল একটি মামলা করি। মামলার খবর জানতে পেরে আসামি আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। আসামি ও তার স্ত্রী নার্গিস সুলতানা ওরফে নওরিন আহমেদ আমাকে ফোন দিয়ে হুমকি-ধমকি দেয়।

কর্পোরেট মার্কেটিং প্রফেশনাল এই কর্মকর্তা বলেন, আমার মেইল এড্রেস দিয়ে ফেসবুকে ফেক আইডি তৈরি করে আমার নামে। এছাড়াও আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। কিন্তু সে সময় আইডি হ্যাক করার নোটিফিকেশন আমার কাছে চলে আসে। তখন থেকে আমি সামাজিক যোগাযোগ ও মেইল এড্রেস ব্যবহারে সজাগ হয়ে যাই।

ভুক্তভুগী সজীব অভিযোগ করে বলেন, আসামি তাফসির আমার নামে ফেক ফেসবুক আইডি তৈরি করেন। সেই আইডি থেকে আমার পরিচিত জনের সাথে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে। আসামি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মেসেঞ্জারে আমার কাছে ৭ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এছাড়াও আসামি আমার ছেলেকে হত্যার হুমকি দেয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়রানি ও হুমকি দেওয়ার অপরাধে আসামির নামে রমনা থানায় তিন থেকে চারটি অভিযোগও আছে।

এছাড়াও আসামি তাফসিরের নামে আমিসহ ৪ জনের অভিযোগ রয়েছে সাইবার ট্রাইব্যুনালে। আমি এই আসামি তাফছির আহমদ খান ও তার স্ত্রী নারগিস সুলতানা ওরফে নওরিন আহমেদের যথাযথ বিচার দাবি করছি।

ভুক্তভোগির স্ত্রী ২০১৯ সালের ২২ জুন গুলশান থানায় আসামির বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর: ১৩৭১) করেন। এতে বলা হয়, ২০১৯ সালের ২০ জুন দুপুর ও বিকালে ভুয়া আইডি থেকে আসামি ভুক্তভোগির স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় মেসেজ পাঠায়। ভুয়া আইডি অর্পিতা বিশ্বাস এর সাথে ভুক্তভোগির প্রেম আছে এবং অনেক মেয়ের সাথে ভুক্তভোগির অবৈধ সম্পর্ক আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ভুক্তভোগী আসামীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল রমনা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি ৪৭৩) করেন। এতে বলা হয়, ২০১৮ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০১৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ডিজিটাল ভাস্টে কর্মরত ছিলাম। বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে আমাকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে ওই কোম্পানির সিইও মোঃ তাফছির আহমদ খান ও তার স্ত্রী নারগিস সুলতানা ওরফে নওরিন আহমেদ। এছাড়াও ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ আমার ফেসবুক আইডির স্ক্রিনশট দিয়ে ফেক আইডি তৈরি করে। পরিচিতজনদের কাছে মিথ্যে চ্যাটিং স্ক্রিনশট ছড়িয়ে দেয়। আমার সামাজিক মর্যাদা ও সম্মান নষ্ট করে তারা।

২০১৯ সালের রমনা থানায় ওই দিন আরো একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর: ৪৭২) করে ফুয়াদ রহমান ফয়সাল নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগে বলা হয়, তিন মাসের বেতন ৬০ হাজার ৪৭৪ টাকা বকেয়া থাকার পরও ইস্তফা দেই। ইস্তফা দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধ করার কথা থাকলেও তা পরিশোধ করেনি। পরবর্তীতে অফিসে ডেকে নিয়ে ডিজিটাল ভাস্টের সিইও ও তার স্ত্রী হুমকি-ধামকি দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী বলেন, আমি ২০১৯ সালে অভিযোগ করেছি। ডিজিটাল ভাস্ট কোম্পানি আমার বকেয়া বেতন ৭৮ হাজার টাকার একটি টাকাও এখন পর্যন্ত পরিশোধ করেনি। আমার ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেক আইডি খুলেন ওই কোম্পানির সিইও তাফসির আহমদ খান। ফেক ওই আইডি থেকে আমার পরিচিত জনদের কাছে তাফসিরের সাথে ফেক (মিথ্যা) আলাপ ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব অপরাধে আসামি তাফসিরের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ করেছি।

অভিযোগ করে তিনি বলেন, মিটিং এর কথা বলে ২০১৯ সালে আমাকে বনানীর একটি বারে নিয়ে যান তাফসির। সে আমাকে জোরপূর্বক মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করে। অভিযুক্ত তাফসির আমার মোবাইল নাম্বার ও ছবি একটি অসামাজিক সাইডে দিয়ে দেয়। এরপর থেকে অসংখ্য আমার মোবাইল নম্বরে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রয়োজনীয় কল আসতে থাকে। বাধ্য হয়ে বর্তমানে অন্য মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করছি ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মামলার তদন্ত কর্মকার্তা বলেন, মামলাটি এখনো আদালতে তদন্তাধীন আছে। তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না, বিস্তারিত পরে জানাবো।

সর্বশেষ - সর্বশেষ সংবাদ