সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি/সুমন আহমেদ: মঙ্গলবার/১৯/০১/২০২১ইং।
সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার ও আপন সহোদর বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি খালেদ মাহমুদ । তাদের দুই ভাইয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। তাদের এ সকল অপকর্মকান্ডে এলাকায় আপন সহোদর দুই ভাইকে বড়ডন” ও” ছোটা ডন হিসেবেই পরিচিত পেয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে রফিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান থাকা কালিন সময়ে ধনপুর ইউনিয়নের বিচার শালিশের নাম করে বিভিন্ন পন্থায় সাধারণ মানুষের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এলাকায় সড়ক, কালভার্ট, ব্রিজ নির্মাণ হলেও বছর না ঘুরতেই ভাঙ্গন দেখা দিছে। এখানেও তার দুর্নীতির সাক্ষ্য মিলছে। চেয়ারম্যান হওয়া আগে ঠিকমত তিন-বেলা খাবার খাবে সেটাই ছিলো তাদের রিতিমত বড় একটি যুদ্ধ। চেয়ারম্যান হওয়ার পরই রাতারাতি হয়েছে কোটি কোটি টাকার মালিক। বসবাস করে কোটি টাকার রাজপ্রাসাদে। চেয়ারম্যানের অপরাধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে টুঁ-শব্দটিও করার সাহস নেই এলাকার কারো। ওই এলাকা তাদের আপন সহদোর দুই ভাইয়ের আইনেই চলে। সাবেক চেয়ারম্যানের সহোদর আপন ছোট ভাই বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি খালেদ মাহমুদ যুবলীগের সভাপতির পদপদবী পেয়েই তিনি এলাকায় সন্ত্রাসী তান্ডব চালিয়ে বেড়ায়। সাধারণ মানুষ জিম্মি তার কাছে। বিরুদ্ধে কথা বললেই চলে রাতের অধারে নির্মাম নির্যাতন। রয়েছে সন্ত্রাসী হোন্ডা বাহিনী। ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে গড়া হয়েছিলো শহিদ মিনার। কিন্তু সহোদর আপন দুই ভাই সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও যুববলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ দলবল নিয়ে রাতের আধারে শহীদ মিনারের জায়গাটি দখল করে নেয়।
শহিদ মিনার রক্ষার্থে (বীর মুক্তিযোদ্ধা) বাদশা মিয়া নামে একজন কোর্টে মামলা করেন। অভিযোগ আছে, বাজারের বহু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কাঁচা মাল কিনে টাকা দেয়না যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ। টাকা চাইলে দোকানদারদের হুমকি প্রদান করে। যুবলীগের সভাপতি পদ ভাগিয়ে নিয়ে দিন দিন তার অপরাধ কর্মকান্ড বেড়েই চলেছে। এলাকায় সন্ত্রাসী ছোট ডন হিসেবেই চিহ্নিত।
ভুক্তভোগী তেল ব্যবসায়ী আঃ রশিদ বলেন, আমার চাচাতো ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধ হয়। পরে চেয়ারম্যান আমাদের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলে ২ লাখ টাকা নেন। জমি আমাদের না দিয়ে বেশি টাকা পেয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়। টাকা ফেরত চাইলে মারতে আসে।
ব্যবসায়ী আরো বলেন, আমার দোকান থেকে যুবলীগের পদ নেওয়ার সময় খালেদ অনেক গুলো মোটর সাইকেলে সাড়ে তিন-হাজার টাকার পেট্রোল নিয়ে আর সেই টাকা দেয়নি। টাকা চাইলে হুমকি দেয়। তেল ব্যবসায়ী আরো বলেন, আমি গরিব মানুষ বাজারে তেল বিক্রি করে খাই, সে এখন যুবলীগ নেতা হইছে তার ক্ষমতা অনেক। বার বার চাইলে আমার দোকান ভেঙে দিবে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার মত কেউ নাই।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদশা বলেন, যুবলীগ নেতা খালেদ ও তার ভাই রফিকুল ইসলাম মিলে শহিদ মিনারের জায়গা দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের বুক এতটুকুই কেঁপে ওঠেনি। কি ভাবে তারা শহিদ মিনারের জায়গা দখল করতে চায়।
স্থানীয়রা বলেন, চেয়ারম্যান যেমন সরকারি অনুদান চুরি করে ব্রিজ, কালভার্টে নিম্ম মানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। অল্প সময়ে তা ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম ভুগান্তিতে পড়ে এলাকাবাসী। এছাড়াও কেড়ে নিয়েছে সাধারণ মানুষের জমি, টাকা পয়সা ধনসম্পত্তি, আত্মসাৎ করে চেয়ারম্যান এখন কোটি পতি।
সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন। তিনি আরো দাবী করে বলেন, শহিদ মিনারের জমি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর বিত্তশালী হয়নি। এলাকায় আমার বাপ দাদার নাম আছে। প্রশাসনের লোকজন তদন্তে আসছিলো তখন আমাদের পক্ষেই সব রিপোর্ট হয়েছে। যারা অভিযোগ করে তারা আমাদের ভালো চায়না।
প্রকাশিত/মিরপুর/ঢাকা/থেকে/বাংলাদেশ একাত্তর.কম/