বাংলাদেশ একাত্তর.কম/ বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ভুয়া টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার মালিক ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামি র্যাবের হাতে গ্রেফতার।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ০৬/০২/২০২২ তারিখ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা মহানগরীর সিদ্দেশ্বরী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৩ টি ভুয়া টিভি চ্যানেল ও ১ টি ভূয়া পত্রিকার মালিক ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামী’ মোঃ আলী আজগর মানিক (৪৮) গ্রেফতার করে র্যাব-৪।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানাগেছে তিনি স্বাক্ষরজ্ঞানহীন অথচ একটি দুটি নয় বরং ৩ টি টেলিভিশন চ্যানেলের চেয়ারম্যান যেগুলোর নাম যথাক্রমে সিটিজি ক্রাইম টিভি, সিটিজি টিভি ও বার্তা টিভিসহ আই বার্তা নামে একটি দৈনিক পত্রিকারও সম্পাদক তিনি। উদ্দেশ্য ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা করে সাংবাদিক কার্ড বিক্রি করা।
চট্টগ্রামে উত্থান হওয়া এই প্রতারক নারী নির্যাতন, যৌন হয়রানি, প্রতারণা, চাঁদাবাজীসহ অন্তত ১০ টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী। আলী আজগর মানিক একের পর এক অপরাধ ঘটিয়ে চট্টগ্রামে টিকতে না পেরে গত ২ বছর ধরে পালিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন। পলাতক অবস্থায়ই সম্পূর্ণ ভুয়া ও অনুমোদনহীন ৩ টি টেলিভিশন চ্যানেল এবং অনুমোদনহীন নামসর্বস্ব একটি ভুয়া দৈনিক পত্রিকাসহ ৪ টি মিডিয়ায় সাংবাদিক বানানোর নামে সারাদেশের অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমানের মোটা অংকের অর্থ। মূলত এটিই তার প্রধান আয়ের উৎস।
অপরাধের কৌশলঃ আসামী আলী আজগর মানিক উক্ত টিভি চ্যানেল ও ভুয়া দৈনিক পত্রিকা খুলে সাংবাদিক বানানোর কথা বলে প্রথমে বিজ্ঞাপন দেয়। এতে বিভিন্ন বেকার ও নীরিহ লোকজন তার বিজ্ঞাপন দেখে আকৃষ্ট হয় এবং তার সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। পরবর্তীতে আলী আজগর মানিক তাদের জানায় যে সাংবাদিক হতে হলে প্রথমে তাকে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ৪/৫ হাজার টাকা পাঠাতে হবে। সে কখনো সরাসরি কারো সাথে দেখা করতো না এবং তার অফিস ও বাসার ঠিকানা কাউকে দিতো না। তার কথায় বিভিন্ন লোকজন সরল মনে বিশ্বাস করে সাংবাদিক হওয়ার আশায় তাকে ৪/৫ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতো। টাকা পাওয়ার পর ধৃত আসামী আলী আজগর মানিক উক্ত ব্যক্তিদের সাথে আর কোন যোগাযোগ রাখতো না। এভাবে সে দীর্ঘদিন যাবত প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমানের অর্থ আত্মসাত করে আসছে।
এছাড়াও ধৃত আসামী আলী আজগর মানিক চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ী ও সমাজের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের নামে সংবাদ প্রচারের ভয়-ভীতি প্রদান করে তাদের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো সে।
আসামী আলী আজগর মানিক বিভিন্ন নারীদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তাছাড়া সে একাধিক বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ ছিল। যে মেয়েকে তার পছন্দ হতো তাকেই সে বিভিন্ন ভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে। তার কুপ্রস্তাবে কোন মেয়ে রাজি না হলে সে তাদের নামে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আপত্তিকর কথা লিখে এবং বিভিন্ন সময় তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিত মর্মে ধৃত আসামী স্বীকার করে।
এই পর্যন্ত আসামী আলী আজগর মানিক বিভিন্ন লোকজনদের নিকট হতে প্রতারণা মূলক ভাবে অনুমানিক ৪/৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে মর্মে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতে এইরুপ সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।