মিরপুর প্রতিনিধি/সুমন আহমেদ;
নিখোঁজের ১ মাস পার হলেও এখনো সন্ধান মেলেনি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বিইউবিটি’র (বাংলাদেশ ইউনির্ভাসিটি অব বিজনেস এ্যান্ড টেকনোলোজির ) কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ইফাজ আহমেদ চৌধুরির।
ইফাজ গত ১১ এপ্রিল মিরপুর ২ নম্বরের বসতি হাউজিংয়ের একটি বাসা থেকে বের হন। এরপর থেকে নিখোঁজ ইফাজের সন্ধান পায়নি তার পরিবার। একমাত্র ছেলের চিন্তায় ইফাজের মা ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। পুলিশ বলছে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তার অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাকে উদ্ধারে তদন্ত চলছে।
এ ঘটনায় গত ১১ এপ্রিল মিরপুর মডেল থানায় একটি জিডি করেন ইফাজের মা জান্নাতুল ফেরদৌস। জিডি ও ঘটনার দিনের বর্ননা দিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, মিরপুর ২ নম্বর বসতি হাউজিংয়ে ১৪ বছর ধরে বাস করি। আমার স্বামী যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ইফাজ আমাদের একমাত্র ছেলে। ৯ মাস আগে ইফাজ পারিবারিকভাবে ভাবে বিয়ে করেছে। ছেলের বউ অন্তঃসত্ত্বা।
ঘটনার দিন ইফাজ বাসা থেকে বের হয়ে মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডে একটি পশু হাসপাতালে যায়। সেখান থেকে আধা ঘন্টা পর বের হয়ে মিরপুর ১ নম্বর সনি সিনেমার হলের সামনে এসে সে হঠাৎ লাপাত্তা হয়ে যায়। আমরা সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় মিরপুর ১ নম্বর সনি সিনেমা হল পর্যন্ত তাকে একটি কালো মাইক্রোবাস ফলো করছে। এরপর ওই স্থান থেকে ইফাজ হঠাৎ গায়েব হয়ে যায়। পরে থানা ,ডিবি ,র্যাবের কাছে কয়েক দফা ধরনা দেই। তারাও আমার ছেলের কোন সন্ধান দিতে পারেন নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ট্রাকিং করে পাচ্ছে না আমার ছেলে কোথায় আছে। তারা তা জানিয়েছে। এ ঘটনায় মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছেও গিয়েছি। সবাই শুধু আশ্বাসের বানী দিচ্ছেন। এক মাত্র ছেলের চিন্তায় পরিবারের সবাই দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন।
ইফাজের শ্বশুর মোঃ রফিকুল ইসলাম হাওলাদার বলেন ইফাজ অত্যন্ত ধার্মিক, নম্র ,ভদ্র ও মার্জিত একটি ছেলে। আমার মেয়ের জমাই বলে বলছি না আপনি খোঁজ খবর নেন। এলাকার সবাই তা বলবে। ওর দাড়ি রয়েছে। ধর্মভীরু। নামায পড়তে পড়তে কপালে দাগও লেগেছে।
আমাদের ধারনা হয়তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে তুলে নিয়ে গেছে। ও যে এলাকায় থাকে মাঝে মাঝে ওই এলাকা থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন মানুষকে তুলে নিয়ে যায়। কয়দিন আগেও ২ জনকে তুলে নিয়ে গেছে বলে শুনেছি। ও যদি অপরাধী হয় তাহলে আইনের হাতে সোপর্দ করবে নতুবা ছেড়ে দেবে। তিনি বলেন, মেয়ের জামাই ইফাজের সন্ধান চেয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তারে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন। ইফাজের জন্য তাদের পুরো পরিবার উৎকন্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
বিইউবিটি’র (বাংলাদেশ ইউনির্ভাসিটি অব বিজনেস এ্যান্ড টেকনোলোজির) পাবলিক রিলেশন অফিসার জিসান আল যুবায়ের বলেন, ইফাজ আমাদের প্রতিষ্ঠনের ( বিএসসি) ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। সে নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশ খোঁজ খবর নিতে এসেছিলো। আমাদের ডিপার্টমেন্টেও এটা নিয়ে মিটিং হয়েছে।
মিরপুর মডেল থানার এস আই ও জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই গোলাম কিবরিয়া বলেন, ইফাজের এখনো সন্ধান পাইনি। হাতে ক্লু নেই যেটা নিয়ে আগাবো, আমরা চেষ্টা করছি।