বিশেষ প্রতিনিধি/ বাংলাদেশ একাত্তর.কম:
রূপনগর এলাকায় প্রায়ই শোনা যায় মৃত্যৃর খবর, বিদ্যুৎতের তারে পেচিয়ে বা অবৈধ সংযোগ দিতে। যে গুলো অপরাধ প্রকাশ পায় এগুলো নিয়ে একটু আলোচনা হলেও কদিন পর সেটাও ধামাচাপা পড়ে যায় প্রভাবশালীদের ক্ষমতা ও কালো টাকার চাপে পড়ে।
গত বছরেও মিরপুর ৬, ত-ব্লকে যুবলীগ নেতা রহিমের বস্তিতে টিনের চালে ময়লা পরিষ্কার করতে গিয়ে বিদ্যুৎতের তারে পেচিয়ে একজনের মৃত্যু হয়। সেটাও ধামাচাপা পড়ে গেছে।
আজ আবার আরেক জনের মৃত্যু! এটাও কি টাকার বিনিময়ে চাপা পড়ে রবে নাকি প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাবে? এমন আর কত মানুষের প্রান গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়ীত্ব পালনে কঠোর হবে? চিরতরে বন্ধ হবে এই সকল অপকর্ম। এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের।
ঘটনাটি ঘটে (২৭ এপ্রিল) মঙ্গলবার সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার পর। রাজধানীর রূপনগর আবাসিক ২৯ নম্বর রোডের শেষ মাথায় ঝিলপাড় বস্তি বা বিএনপি বস্তি বা রোহিঙ্গা বস্তির অটোরিকশার গ্যারেজের ভিতর।
স্থানীয়দের বরাদে জানাগেছে তিনজন ঘর মালিকের চোখের সামনে ১৩ বছর বয়সী কিশোর রিয়াদ লাশ হয়ে গেলো! তাকে বাঁচানোর চেষ্টা পর্যন্ত করেনি তারা।
ঘটনার সময় উপস্থিত অটোরিকশা গ্যারেজ মালিক ইব্রাহিম, মাসুদ ও মিজান ছিলো। এমনকি তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও নেয়নি। এবং মারা গেছে বিষয়টি গোপন রেখে তারাই লাশ তড়িঘড়ি করে লাশটিকে ঢেকে রাখে। তারা বাইরে এসে কানা ঘুষা করে চা-বিড়ি খেয়ে খুব ঠান্ডা মাথায় লাশ সরিয়ে ফেলে। তাদের এই গড়িমসি দেখে অনেকেই ধারনা করছেন এটা কি দুর্ঘটনা! নাকি পরিকল্পিত হত্যা ?
সন্ধ্যার দিকে ঘটনা ঘটলেও রাতে তারাবির নামাজের সময় রাস্তা ফাঁকা পেয়ে প্রশাসন ও স্থানীয়দের চোখের আড়ালে লাশটাকে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিল কথিত যুবলীগ নেতা সোহেল রানা।
পরে জানা গেলো লাশটি মিল্কভিটা মোড়ে মল্লিকার ভিতরে রাখা হয়েছ। পরে তারা রাত ১টার দিকে লাশ নিয়ে যায় মিরপুর-৭, বঙ্গবন্ধু বিদ্যানিকেতন স্কুলের পাশে বড় মসজিদে।
লাশ বহনকরার জন্য একটি পিকআপ গাড়ীও রাখা। দেখা গেলো মিল্কভিটার কর্মচারী কথিত যুবলীগ নেতা সোহেল রানাসহ তার বাহিনীর লোকজন লাশ অন্যত্র সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করছে।
খবর পেয়ে ওই গভির রাতে রূপনগর থানার চৌকস পুলিশ অফিসার (উপ-পরিদর্শক) এসআই আল-আমিনসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে লাশটিকে উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রূপনগর আবাসিক ২৯ নম্বরে জুয়ারি ইব্রাহিম সাবেক পল্লবী থানা ছাত্রদল নেতা বর্তমান ইউনিট আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। এবং ইব্রাহিম ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মোল্লার ক্যাডার ছিলো।
অন্যদলের হলেও সুই হয়ে আওয়ামীলীগে প্রবেশ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে গলা টিপে খুন করার লক্ষে রাষ্ট্রের মহা মুল্যবান সম্পদ বিদ্যুৎ অবৈধ সংযোগ দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ টাকা। এবং কেরাম বোর্ড খেলার নামে চলে জুয়া ও পাশাপাশি চলে মাদকের রমরমা বানিজ্য। খালপাড় দখল করে ঘর বানিয়ে দেদারসে চলছে তার সকল অপরাধ ও অনৈতিক কর্মকান্ড।
প্রতিমাসে আয়ের একটি বড় অংশ চলে যায় বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসী বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামীদের কাছে।
এলাকাবাসীরা বলেন রূপনগর থানাধীন এলাকার অলিগলিতে রাস্তার উপর ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা চার্জ দেওয়া হয়। সরাসরি বিদ্যুৎতের পিলার থেকে লাইন টেনে সংযোগ দেয় তারা।
রাষ্ট্রীয় সম্পদ চোখের সামনে চুরি হলেও রূপনগর থানার প্রশাসন বলছে ভিন্ন কথা” এগুলো আমাদের দায়ীত্ব না ওটাতো বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন দেখবে। এই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করে বিদ্যুৎ অফিসের গাড়ী অথচ তারাও কোন পদক্ষেপ নেয়না।
স্থানীয়রা বলেন প্রশাসনের নজরদারীর অভাবে দিনকে দিন অপরাধের চিহিৃত বাজার তৈরি হয়েছে। রূপনগর থানার পিছনে ও সামনে বস্তিতে কারেন্ট চোর দুলাল (স্বীকৃতি প্রাপ্ত-কারেন্ট চোর) হলেও হাজার হাজার ঘরে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎতের সংযোগ দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। বর্তমান এ অবৈধ ব্যবসা চালু রাখতেই কারেন্ট দুলাল যুবদলের সন্ত্রাসী হলেও বর্তমানে ঠাই হয়েছে যুবলীগে। দুলাল ছাড়াও অটোরিকশার গ্যারেজ বানিয়ে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের অর্থ, তারা হলো- নাটা সোহেল, পুরবী হলের আকা ওরপে কাইল্যা আকা, সিদ্দিক, নাটা জিয়া, কলা সাদেক। এরা সবাই স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। যুবলীগের সাইন বোর্ড ব্যবহার করেই অনেক বছর ধরে সরকারের এই মহামুল্যবান সম্পদ বিদ্যুৎ চোরাই পথে বানিজ্য করে আসছে।
অভিযোগ রয়েছে অবৈধ আয়ের একটি মোটা অংকের টাকা ১০ তারিখের ভিতর দায়ীত্ব এড়িয়ে যাওয়া সকল উর্ধতন কর্মকর্তার টেবিলে অনায়াসে চলে যাচ্ছে রূপনগর থানার সোর্স কাদেরের মাধ্যমে।
লাশ গায়েবের বিষয়ে পল্লবী জোনের এডিসি আরিফুল ইসলাম বলেন লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।