নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রভাবশালী এক ব্যক্তি সিটি কর্পোরেশনের জায়গা ফুটপাত দখল করে পাকা দোকানঘর নির্মাণ করেছেন। প্রায় ১৩ মাস ধরেই বহুতল ভবন নির্মান করছেন। বাড়ীর সামনে ফুটপাত দখল করে পাকা দোকান নির্মাণ করা হলেও এখন পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের নজরে আসেনি। উক্ত বাড়ীর নিকটে সিটি কর্পোরেশনের লোকের আনাগোনা চলে। কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেনও রোজ এই বাড়ীর সামনে দিয়ে কাঠের চশমা পড়ে কার্যালয়ে আশা যাওয়া করেন। অবাক করা বিষয় হলো ১৩ মাসে একবারও ওই অবৈধ স্থাপনার দিকে চোখ পড়েনি। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের মাত্র ১০০ গজের মধ্যে বহুতল ভবন নির্মানের নামে ফুটপাত পুরোটা জুড়েই দখল করে পাকা দোকান করা।
মিরপুর প্রেসক্লাব এর সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রাজু আহমেদ তার ফেসবুক পেজে ফুটপাত জুড়ে অবৈধভাবে পাকা দোকান নির্মাণ বিষয়ে ছবিসহ স্ট্যাটাস দিলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহুর্তে ভাইরাল হয়। নড়েচড়ে উঠে সিটি কর্পোরেশন ও হাউজিং কর্তৃপক্ষ।
মাত্র এক ঘন্টার মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ২ নির্বাহী প্রকৌশলী ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন এবং নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন এবং অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন এবং তিনি ভবন মালিককে বলেন যদি আপনি না ভাঙ্গেন তাহলে জরীমানাসহ উচ্ছেদ করা হবে। তৎক্ষনাৎ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে শহিদুল রহমান নামে পল্লবী থানায় অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এর ৩৫ মিনিট পরে মিরপুর ২নং হাউজিং অফিসের লোকজন ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন। তারাও নির্মাণধীন বহুতল ভবনের সামনে ফুটপাতে পাকা অবৈধ স্থাপনা ভাঙ্গার নির্দেশ দেন। কর্মকর্তারা বলেন, আপনি বাড়ী নির্মাণ করছেন এখানেও অনিয়ম দেখা দিছে। আবার বে-আইনি ভাবে ফুটপাত জুড়ে পাকা দোকান করছেন। তারা আরো বলেন যদি আপনি নিজে এই অবৈধ স্থপনা না ভাঙ্গেন তাহলে আমরা লিখিত আকারে অভিযোগ করে আপনার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী কাল সকাল ১১ টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হলো আপনাকে। হাউজিংয়ের লোকের উপর চওড়া হয়ে উঠে বাড়ীর মালিক বলেন দেন ভেঙ্গে দেন তাতে আমার কোনো ক্ষতি হবেনা। এর আগে অবৈধ স্থাপনা পাকা দোকান করার বিষয়ে গনমাধ্যম কর্মীরা জানতে চাইলে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের মালিক আব্দুল জলিল বলেন, এটা সিটি কর্পোরেশনের জায়গা না এটা হাউজিংয়ের জায়গা আমি দোকান করছি তাতে সমস্যা কি, হাউজিং অফিসে বরাদ্দের জন্য আবেদন করেছি।
এবিষয়ে জানতে ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সেকশন-১২, ব্লক-সি, রোড-নং ১৩, বাসা-১, মিরপুর পল্লবীর পুরাতন থানা রোডের দক্ষিণে গোলচত্তরে ডান পাশে তৈরি হচ্ছে বহুতল ভবন। মালিক ভবনের সামনের ফুটপাত জুড়েই পাকা দোকান নির্মাণ করছে। এতে হতবাক এলাকাবাসী। আব্দুল জলিল এসব দোকান নির্মাণের আগেই দোকান ভাড়া বাবদ এডভান্স নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। সিটি কর্পোরেশন ও হাউজিং কর্তৃপক্ষের নিষেধ করা সত্বেও আব্দুল জলিল অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে নির্মাণ কাজ করছে এতে হতবাক হয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা বলেন আব্দুল জলিল ক্ষমতার বলে জনগণের হাটা চলার ফুটপাত দখল করে পাকা দোকান করতেছে। তার দেখাদেখি তো সবাই ফুটপাত দখল করবে। আমরা তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস রাখিনা সে জামাত নেতাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে চলেন। স্থানীয়দের দাবী হাউজিংয়ের লোকজন এলে শুধু দোকান নয় তার নির্মাণাধীন বহুতল ভবন ও ভাঙা পড়তে পারে।
মিরপুর-১০ ও মিরপুর-২ থেকে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেনের দেখা মেলেনি। অথচ তার কাউন্সিলর কার্যালয়ের ১০০ গজের মধ্যে এই অবৈধ স্থাপনা তৈরি হলেও কাউন্সিলরের নাকি চোখেই পড়েনি।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অঞ্চল ২ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিউল আযম বলেন ফুটপাত দখল করে পাকা দোকান করার অভিযোগ পেয়েছি আমরা ব্যবস্থা নিবো। জনগনের হাঁটাচলার ফুটপাত বন্ধ করে কেউ অবৈধভাবে স্থাপনা গড়ার সুযোগ পাবে না। আমরা আজই থানায় অভিযোগ করেছি আগামীকাল হয়তো অভিযান হতে পারে।
অভিযোগের বিষয়ে পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাপস বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।