ঢাকা, প্রকাশিত; ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইং
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবী, জাতীয় মানবাধিকারকর্মী, জাতীয় যুবনেতা এবং হাজার হাজার দক্ষ যুব সংগঠক তৈরির মহানায়ক—যিনি আমার মতো একজন ক্ষুদ্র সাদ্দামকে রাস্তা থেকে তুলে এনে সংগঠনের হাতেখড়ি দিয়েছেন, সেই প্রিয় বড় ভাই, অভিভাবক, আস্থা ও ভালোবাসার শেষ ঠিকানা ড. গোলাম রাব্বানী নয়ন বাঙ্গালী-র আজ শুভ জন্মদিন। জন্মদিনের এই বিশেষ দিনে মহান আল্লাহর কাছে তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করছি।
নয়ন বাঙ্গালী শুধু একটি নাম নয়—এটি একটি ব্র্যান্ড। যাকে সারাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নয়ন বাঙ্গালী নামেই চেনে মানুষ।
শৈশব ও সংগ্রামের গল্প;
মিরপুরের বিহারী পল্লীতে বেড়ে ওঠা এই ক্ষুদে বাঙালি নয়ন বাঙ্গালী ১৯৭৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এক গুণবতী নারীর গর্ভে গুণবতী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কৈশোর থেকেই সীমাহীন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে করতে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে অবদান রেখে একজন অসীম সাহসী সংগঠক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন।
অর্জন ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি;
তিনি শ্রেষ্ঠ সমাজ সংগঠক হিসেবে জাতীয় পদক, প্রধানমন্ত্রীর যুব পদক, রাষ্ট্রপতির স্বর্ণ পদক এবং কমনওয়েলথ পদক পেয়েছেন।
সমাজকর্মকে তার জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করায় তিনি শিক্ষাগতভাবেও এর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগে স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরবর্তীতে গবেষণার জন্য আমেরিকার ভার্জিনিয়ার লিবার্টি ইউনিভার্সিটিতে যান, যেখানে গত সাত বছর ধরে সামাজিক নেতৃত্ব বিষয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে তিনি সমাজকর্মের লাইসেন্স পেয়েছেন, যার ফলে তিনি আন্তর্জাতিক সমাজকর্মী হিসেবে পরিচিত।
সামাজিক রাজনীতি ও নেতৃত্ব;
নয়ন বাঙ্গালী সোশ্যাল ওয়ার্ক পলিটিকস ধারণার প্রবর্তক। তার মতে, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দলে থেকে কী কাজ করতে হবে, তা বুঝতে হবে। সাধারণত ডাক্তার, প্রকৌশলী, শিক্ষক তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখেন, কিন্তু রাজনৈতিক দলের কর্মীরা অনেক সময় বুঝতে পারেন না তাদের কাজ কী হওয়া উচিত। তাই তিনি Social Work Politics নামে একটি প্রকল্প চালু করেছেন।
তিনি যে শহরে থাকেন, সেটি “World Cherry Capital” নামে পরিচিত। ওই শহরের মেয়র তাকে “রোল মডেল” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং “Mayoral Proclamation” প্রদান করেছেন।
যুব উন্নয়ন ও প্রবাসীদের জন্য কাজ;
নয়ন বাঙ্গালী জাতীয় যুবনীতি প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ২০০৩ সালে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি যুব কার্যক্রমের প্রস্তাবনা দেন।
আজ প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি যুবক বিদেশে কর্মরত—যারা দেশের অন্যতম বড় অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি। বিদেশে থাকা এই যুবকদের জন্য নয়ন বাঙ্গালী International Migrant Foundation (IMF) প্রতিষ্ঠা করেছেন।
২০২৫ সালে প্রতিটি দেশে IMF অফিস চালু হবে, যা দূতাবাসগুলোর ব্যর্থতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে। বিদেশে থাকা যুবকরাও একটি নিজস্ব টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে নিজেদের মতামত শেয়ার ও জীবন চলার পথ নির্ধারণ করতে পারবেন।
নেতৃত্বের পাঠশালা ও সামাজিক রাজনীতি;
নয়ন বাঙ্গালী প্রতিষ্ঠা করেছেন School of Leadership, যার মাধ্যমে তিনি দেশের সর্ববৃহৎ সামাজিক যুব সংগঠন National Youth Forum গড়ে তুলেছেন।
তিনি বাংলাদেশের প্রথম “Bangladesh Youth Parliament” চালু করেছেন। এজন্য সামাজিক রাজনীতির জনক হিসেবে তাকে সম্মান করা হয়। তিনি চান, বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কর্মীরা আদর্শ সমাজকর্মী হয়ে গড়ে উঠুক। কারণ, যদি আদর্শ সমাজকর্মী তৈরি হয়, তাহলেই তারা আদর্শ নেতা হয়ে সমাজের উন্নয়ন করতে পারবে। অন্যথায়, রাজনীতি শুধু মারামারি, দলাদলি, চাঁদাবাজি, মাদক সেবন, টেন্ডারবাজির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
সামাজিক নীতিমালা ও আইনি কাজ;
নয়ন বাঙ্গালী সামাজিক নীতিমালা ও সামাজিক আইন নিয়ে কাজ করছেন। তিনি একটি বস্তুনিষ্ঠ মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছেন, যাতে সমাজ কোন কোন আইনের ভিত্তিতে চলবে, তা সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত হয়।
তিনি একজন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। পাশাপাশি, বিশ্ব দরবারে বাঙালিদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন। এজন্য আমেরিকান বার অ্যাসোসিয়েশনের মানবাধিকার কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
স্টেট বার অব ক্যালিফোর্নিয়া তাকে “Foreign Legal Consultant” হিসেবে লাইসেন্স দিয়েছে, যার ফলে তিনি আমেরিকায় আইন পেশার সুযোগ পেয়েছেন।
সরকারের নির্যাতন ও অবিচার;
এই মেধাবী সংগঠক ড. নয়ন বাঙ্গালীকে স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকার তার পেটোয়া পুলিশ বাহিনী দিয়ে মেরে ফেলার চক্রান্ত করে। আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও তার হাত চিরতরে ভেঙে দেওয়া হয়।
উপসংহার;
তার শুভ জন্মদিনে অশেষ দোয়া ও ভালোবাসা জানাই। আমরা আশা করি, এই মেধাবী মানুষ নয়ন বাঙ্গালী খুব শিগগিরই দেশে ফিরে আসবেন। কারণ, তার মেধা ও নেতৃত্ব এখন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।”
—————————–
আকতার হোসেন সাদ্দাম
লেখক, সংগঠক ও গবেষক, সভাপতি – পল্লবী প্রেসক্লাব।