রাজু আহমেদ: ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ইং
মিরপুর ১০ নম্বরে মানুষের দান করা পবিত্র কোরআন শরিফ খোলা বাজারে বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে মোহাম্মাদিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার একদল শিক্ষক ও কর্মচারী। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা তাদের গণপিটুনি দিয়ে ভিডিও করে ছেড়ে দেয়। এর আগে, আওয়ামী লীগ নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরের দানকৃত কোরআন শরিফ বিক্রি: মাদ্রাসা পরিচালক সালাউদ্দীন সেটি ফাঁস হয়।

পরিচালক; ভন্ড প্রতারক মাওলানা সালাউদ্দীন।
ঘটনাটি ঘটে ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, যখন মিরপুর ১০ নম্বরে একটি দোকানে বিপুল সংখ্যক কোরআন শরিফ বিক্রির চেষ্টা করে কিছু ব্যক্তি। দোকানদারের সন্দেহ হলে তিনি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরে মোহাম্মাদিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার সামনে, বাসা ৮২, রোড ৫, ই ব্লক, লাল মাটিয়া, মিরপুর ১১-এ শতশত স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানান এবং ভণ্ড মাওলানা সালাউদ্দীনকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরবর্তীতে স্থানীয় মুরব্বিরা ২০ ফেব্রুয়ারি বিচার শালিসের ব্যবস্থা করেন। সেখানে মাওলানা সালাউদ্দীন ও তার সহযোগীরা তাদের সকল অপরাধর কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইলে স্থানীয়রা তখন চিল্লাইয়া বলে উঠে তোদের কোনো ক্ষমা নেই, তোরা অমানুষ, ইসলামের বিরুদ্ধে তোরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কোন ক্ষমা হবেনা, ক্ষমার যোগ্যনা না তোরা বলে সবাই। তবে এখনো বিচারের রায় জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এই চক্রটি এতিমখানা ও মাদ্রাসার নাম ব্যবহার করে মানুষের কাছ থেকে দান সংগ্রহ করত এবং পরে সেই কোরআন শরিফসহ অন্যান্য দানকৃত সামগ্রী বিক্রি করত। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মাদ্রাসায় ফিরে গেলে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে মাদ্রাসার কালেকটর হাফিজকে মারধর করেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকের বাহিনীরা। এর পরেই সব তথ্য ফাঁস হতে থাকে। পরিচালকের নারী ঘটিত কেলেংকারীর ঘটনা বেরিয়ে আসে। তার সকল অপকর্ম লুকিয়ে রাখতো আওয়ামিলীগ নেতা মালেক।

মিরপুর ১১ লাল মাটিয়া এলাকায়, মোহাম্মাদিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা, যা সকল অপকর্ম চলে এই সাইনবোর্ডের আড়ালে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অভিযুক্ত মাদ্রাসার পরিচালক সালাউদ্দীন দীর্ঘদিন ধরে ধর্মের নামে প্রতারণা করে আসছে। তিনি বিভিন্ন বাসা-বাড়ি, অফিস ও প্রভাবশালীদের কাছ থেকে এতিমদের নামে চাঁদা আদায় করতেন এবং সেই অর্থ নিজের সম্পত্তি গড়তে ব্যবহার করতেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রকৃত অর্থে নামাজ আদায় করেন না, করলে তা শুধুমাত্র লোক দেখানো। তার মাদ্রাসায় একাধিক লেবাসধারী সন্ত্রাসী রয়েছে।
এছাড়াও, মিরপুর কালসী মোড়ে এতিমখানা ও মাদ্রাসার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে আরেক মাদ্রাসার ভণ্ড পরিচালক।
এলাকাবাসী আরও জানায়, এই মাদ্রাসার বেশিরভাগ শিক্ষার্থী টাকা দিয়ে ভর্তি হয়েছে, প্রকৃত এতিম খুব কমই আছে। মাদ্রাসার শিক্ষকরা শিশুদের দিয়ে চাঁদা তুলত এবং ধর্ম ব্যবসার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করত। স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এই ধরনের ভুঁইফোড় মাদ্রাসাগুলো বন্ধ করা এবং ধর্মের নামে প্রতারণা বন্ধ করা।
স্থানীয়দের দাবি:
১. প্রতারক সালাউদ্দীন ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।
২. দেশের সব ভুঁইফোড় মাদ্রাসা ও এতিমখানার কার্যক্রম তদন্ত করা হোক।
৩. ধর্মের নামে ব্যবসা বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হোক।
জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রশাসনিক উদ্যোগের মাধ্যমে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করাই এখন সময়ের দাবি।